হাতি কাঁদতে, হাসতে এবং এমনকি রাগ করতে পারে
পৃথিবীর সবচেয়ে আশ্চর্যজনক প্রাণীগুলোর একটি হলো হাতি। বিশাল আকার, শক্তিশালী শুঁড়, স্মৃতিশক্তি, এবং সামাজিক আচরণ তাদের বিশেষভাবে আকর্ষণীয় করে তোলে। স্থলজ প্রাণীদের মধ্যে সবচেয়ে বড় মস্তিষ্ক হলো হাতির। তাদের প্রায় ২৫৭ বিলিয়ন নিউরন রয়েছে, যা মানুষের মস্তিষ্কের প্রায় তিনগুণ।
নিচে কিছু চমকপ্রদ তথ্য দেওয়া হলো যা জানলে আপনি অবাক হবেন-
হাতি প্রতিকূল পরিবেশে নতুন কিছু শিখে নতুন পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে।
হাতিরা বয়স্ক সদস্যের নেতৃত্বে একক পরিবার গঠন করে নির্দিষ্ট জায়গায় জটলা হয়ে বসবাস করে। নিজেদের মধ্যে যোগাযোগের জন্য অনেক দূর থেকে কম-ফ্রিকোয়েন্সির শব্দ ব্যবহার করে।
হাতির স্মৃতিশক্তি এতটাই ভালো যে তারা বহু বছর পরেও কোনো জায়গা বা ব্যক্তিকে চিনতে পারে।কোনো সদস্য মারা গেলে হাতির দল শোক প্রকাশ করে। তারা মৃত হাতির দেহ ছুঁয়ে দেখে, ঘষে, এমনকি মাটি বা পাতা দিয়ে ঢেকে দেয়।
হাতি কাঁদতে, হাসতে এবং এমনকি রাগ করতে পারে। তারা খুশি হলে চেঁচায়, রাগ হলে মাটি কাঁপিয়ে দেয়।হাতিরা নিজেদের আয়নায় চিনতে পারে। যা খুব অল্প কিছু প্রাণীর ক্ষেত্রেই দেখা যায়।
হাতি আয়নায় নিজের প্রতিবিম্ব দেখে বুঝতে পারে যে এটি সে নিজে- এটি বুদ্ধিমত্তার এক বড় প্রমাণ।
হাতি প্রতিদিন প্রায় ২০০ লিটার পানি পান করতে পারে। তৃষ্ণা পেলে তারা দূর থেকে পানির গন্ধও শনাক্ত করতে পারে।
হাতির চামড়া সাধারণত প্রায় ২.৫ সেন্টিমিটার (১ ইঞ্চি) পুরু হয়ে থাকে। তবে কিছু স্থানে (যেমন পিঠ বা কাঁধে) এটি আরও মোটা হতে পারে। তবে আশ্চর্যজনকভাবে, হাতির চামড়া এত পুরু হলেও খুব সংবেদনশীল। হালকা ছোঁয়াতেও তারা প্রতিক্রিয়া দেখায়।
হাতিরা মাটি বা কাদামাটি দিয়ে নিজেদের গা ঘষে, যাতে ত্বকে আর্দ্রতা ধরে রাখা যায় এবং পোকামাকড় দূরে থাকে।হাতির চামড়ায় থাকা ভাঁজ ও বলিরেখা শুধু সৌন্দর্যের দিক থেকে নয়, বরং ঘাম ও পানি ধরে রাখতেও সাহায্য করে, যা তাদের ঠান্ডা রাখে।
একটি পূর্ণবয়স্ক হাতি প্রতিদিন গড়ে ১৫০ থেকে ২০০ কেজি খাবার খায়। তারা প্রতিদিন প্রায় ১৬ থেকে ১৮ ঘণ্টা সময় ব্যয় করে খাবার খেতে। তাদের খাদ্য তালিকায় থাকে ঘাস, পাতা, গাছের ছাল, ফল, শিকড়, বাঁশ এবং কখনও কখনও ধান বা চাষের শস্য (বন হাতিদের ক্ষেত্রে)।
হাতির যোগাযোগব্যবস্থা খুবই জটিল ও আকর্ষণীয়- শুধু ডাকে তাই নয়, তারা চিৎকার, স্পর্শ, এবং শরীরের নড়াচড়ার মাধ্যমেও একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগ করে। কিছু শব্দ এত নিম্ন কম্পাঙ্কের (infrasound) যে মানুষ শুনতেই পায় না, কিন্তু কয়েক কিলোমিটার দূরের হাতিরা সেটা বুঝতে পারে।
হাতিরা মাটিতে পা দিয়ে এমনভাবে ধাক্কা দেয় যেন তা কম্পন সৃষ্টি করে। এই কম্পন তারা পায়ের নিচে থাকা বিশেষ সংবেদনশীল টিস্যু দিয়ে অনুভব করতে পারে। এটি দূরে থাকা হাতিদের জন্য সতর্ক সংকেত বা আহ্বান হিসেবেও কাজ করে।